রবিবার, ২৮ অক্টোবর, ২০১৮

হজম করতে ANTACID ( কবিতা নয়, চুলকানি)২০১৮



শুনুন,আপনি মাটি তে থেকে মাটির কথা বলুন,মাথা টা এবার এট্টু খানি হালকা করে তুলুন,নিন,এবার আকাশ এর কথা বলুন। গ্যালাক্সি নিয়ে নাক গলাতে যাবেন না যেন,ওটা আবার কিন্তু আয়ত্বের বাইরে।ওই আকাশ,মেঘ,তারা,ব্যাস ব্যাস,আর এগোবেন না,খবরদার,আর না।
ধূমকেতু-নীহারিকা রাখাই যায়,তবে থাক,ওটা তেমন খাবে না মানুষ।

আচ্ছা,মাটিতে থেকে মাটির ভিতরের কথা কজন বলতে পারে! ভিতরে বলতে ভিতরে,অনেক ভিতরে,যেখানে সভ্যতা বলে কিছু নেই,যেখানে গাদা গাদা রহস্য, দৃষ্টিবোধ,দর্শন আরো এরকম সব জিনিস মারামারি করে,আবার এক সাথে চা টা খায় আর কি! চা এর দোকান টা পৃথিবীর আত্মার।আপনাকে
অনেকটা নিচে নামতে হবে,অনেকটা,সেখানেই আসল উচ্চতা।
আপনি আপনার গল্পে বাক্য দেখছেন,বাক্যের ভিতর গলিপথ দেখেননি,দেখেননা,দেখছেন না।গলিপথ এর ভিতর চোরাপথ আছে,সেটার তো কোনো প্রশ্নই ওঠে না,ফালতু যতসব।।কারণ আপনি ঐ সমস্ত দেখতে গেলে, সাধারণ মানুষ আপনাকে দেখবে না।আর আপনি ও সাধারণ মানুষ,তাই তাদের জন্য মাথা ব্যাথা টা আপনার যথেষ্ট আছে।
আপনি কবিতার মতো কবিতার সাথে সহবাস করেননি,করলে আমাদের মতন,কিছু পাগলের বাচ্চার মতন নির্জন দ্বীপ এর বাসিন্দা হয়ে যাবেন।
আপনি সেটা চান ও না,যেমন টা কমার্শিয়াল মুভি ডিরেক্টর রা চান না।
সবাই যদি চাইত,তবে জীবনানন্দ আবার ও ফিরে অসিত,ঋতুপর্ণ ঘোষ আবারো চিত্রাঙ্গদা বানাইত।
আপনি ভাবতে চান না,সময় কোথায় অত! পাঠকের ও ভাবার মতন সময় নেই। সস্তা ফুটেজ পাবেন আপনি,সস্তা লিখুন। না না সস্তা বলে কিছু হয়না,কবি লিখছেন,ওটা সস্তা কখনোই নয়।এবার দেখুন মানুষ এর ভিড় কত আপনার পাশে।
আপনার লেজ,মাথা,হাত সব ধরে টান মারছে,মাঝে মাঝে ভয় করে শিকল টা ধরে না টেনে দ্যায়।।
সে যাই হোক,অত কিছু জানিনা,আপনি বেশি ভাবনার জিনিস লিখতে যাবেন না,মানুষ বুঝবেই তো না,কি হবে ছাই ওসবে?
জ্যোতির্ময় দা বলেছিল ,কবিতা আসলে বাল ছিঁড়ে আঁটি বাঁধা।
ঠিক তাই,আপনার ওসব ছেড়া বাঁধা অত নাটকের দরকার নেই,সাধারণ মানুষ কে পাশে রাখুন।সেই ভাবে চলুন।

এবার দেখুন আপনি ভাবছেন।ব্যাপারটা কি হল! কি বলে গেল সবজান্তা টা এতকিছু?

যদি না ভাবেন, তাহলে আমায় বিসর্জন দিন।

এর পর হজম না হতে পারে।অ্যান্টাসিড নিয়ে রাখুন।
(অঞ্জন ঘোষ রায়)

বুধবার, ১০ অক্টোবর, ২০১৮

গদ্য কবিতা:- কথা ছিল / ২০১৮


( গদ্য কবিতা )

(নাম:- কথা ছিল)
কথা ছিল তোর জন্যে একটা কবিতা জন্ম দেব।শব্দ গুলো সব পোক্ত ভাবে সাজানো থাকবে,যেমন টা থেকে থাকে  আর কি আগাগোড়া । অভিমান থাকবে,কষ্ট থাকবে,আর তার চেয়েও বেশি থাকবে ভালোবাসা।এই শব্দ টা না আমার কাছে বেশ নাটকীয় শোনায়,বোকা বোকা,তাও আমি লিখব তোর জন্য,কথা ছিল। তোকে সেটা পড়াব আমি,তুই পড়তে পড়তে চোখে টলটলে দীঘি দের ঘর বানাবি,আমি জড়িয়ে ধরে বলব,বুকে টেনে নিয়ে বলব তোকে ভালবাসি।
কথা ছিল তোর জন্য একটা সাদামাটা প্রেমের গল্প লিখব,একটা লম্বা সিড়ি বানাব,তুই ভেজা খোলা চুল সামলে উঠবি গোলাপী পায়ে,ছাদে আমি এক কোণে দাঁড়িয়ে থাকব,থাম এর আড়ালে,তুই জানতেও পারবিনা,হঠাৎ করে জাপটে ধরে আমি একশ চুমু দেবো তোর ঠোঁটে, গালে, গলায় ,ঘাড়ে,তুই বাধা দেওয়ার ভান করবি,কিন্তু বাধা দিবিনা। এমনটাই কথা ছিল।
কথা ছিল,একসাথে বই পাড়া চষে বেড়ানোর,ফুচকার দোকানে খুব করে ঝাল দিয়ে চোখে জল আনবার,যদিও বা এখন এমনিই তা আসে,তবে তা নির্দিষ্ট সময়ে, রাতে বিছানায় শুয়ে,যখন মানুষ এর মন-মনন খুব নরম , দুর্বল এবং নির্লজ্জ হয়ে যায়,তখন।
তোকে আমি চিনেছি কিভাবে,তুই আমাকে চিনলি কিভাবে সেটা অদ্ভুত গল্পে,আমার লেখা কবিতায়।তুই আমার সুন্দরী পাঠিকা,আমার উপন্যাস হয়ে উঠেছিস ,উপন্যাস এর লাইন গুলো আমি তোর মুখ থেকে নিয়ে বসাতাম,মনে হোত এবার ঝর্ণা নামবে,ছাউনী তে চাঁদ এর ভেজা ভেজা আলো পড়বে,শিশির মাখা তোর হাত,আমার দাড়ি ভর্তি গালে বিলি কাটছে,তোর নিশ্বাস পড়ছে আমার থুতনিতে এসে,আমি তোর ঘাড় এর কাছে হাত নিয়ে ভালোবাসা রাখছি,আদর রাখছি যত্ন করে। মনে হোত।
কথা ছিল আমি তোর কষ্ট কারাগারে নিজেকে কয়েদী বানাব,ইউনিফর্ম টা তুই উপহার দিবি আমার জন্মদিনে,আর আমি তোর জন্মদিনে উপহার দেব,এমন কোনো বই,যে বই তে আমার আঙ্গুল গুলো হাত রাখত কোনোদিন।এবার তুই সেই স্পর্শ নিবি বই এর ভিতর,গন্ধ নিবি।আমি তৃপ্তি পাব,কথা ছিল।
কথা ছিল,তুই আমার পাশে,কাছে,অনেকটা কাছে থাকবি,আমি যখন একলা চোখে জলের ভিতর মনমরা স্মৃতি হাতরে বেরাবো,তুই হাত বুলিয়ে দিবি আমার আত্মায়,ওটা তুই ই পারিস শুধু,কারণ তুই আমার উপন্যাস।
কথা ছিল,এখনো আছে,তুই আছিস, আসলে তোর স্মৃতি গুলো আছে,আমি গুছিয়ে রেখেছি,যত্ন রাখে ন্যাপথলিন।
এখন তুই অনেকটা দূরে কোনো পাহাড় এর গায়ে,যেখানে রোজ বহু সংখ্যার মেঘ ভাঙ্গে দেওয়ালে দেওয়ালে ধাক্কা খেয়ে,তুই কাঠের রেলিঙে হেলান দিয়ে বসে গান শুনিস, "ওহ শাম কুছ আজীব থি,ইয়ে শাম ভি কুছ আজীব হ্যায়"। আমিই গেয়ে ছিলাম কোনওদিন,সুর টা পাক্কা ছিলনা,তাও তুই সেটাই শুনিস,তোর নাকি ভাল লাগে,আলাদা কি নাকি পাস ওতে! আমি বুঝিনি। এখনো আগলে রেখেছিস। তোর নিজের অজান্তেই এখন তোর চোখে জল ,তুই চোখ বুজে নিলি,এক ফোঁটা পড়ল মোবাইল এর স্ক্রিনে।তুই কাদছিস,কেন কাদছিস নিজেও জানিসনা। রিংটোন টা বেজে উঠল - "ও যে মানে না মানা"
রণদীপ ফোন করেছে তোকে,তুই কল টা রিসিভ করিসনি,আবার ফোন এলো এবার রিসিভ করে চুপ করে থেকে বললি "রণদীপ আমি ভালো নেই"।
সন্ধ্যা হলে আকাশ এর রঙ টা প্রায়দিনই বেগুনি আভায় জড়িয়ে যায়।আজকে তুই বেগুনি সালোয়ার টা পড়েছিস,আমি দিয়েছিলাম,তোর জন্মদিন আজ,কথা ছিল তুই প্রতি জন্মদিন এ এই সালোয়ার টা পড়বি,আমি না থাকলেও,তুই কথা রাখিস।
কথা ছিল তুই আমার উপন্যাস হবি,হয়েছিস।
©অঞ্জন ঘোষ রায়

কবি এবং কেরানী কবি

মহৎ কবি কখনো ডায়েরি লিখবেন না, এটা আপনাকে বুঝতে হবে। তার জীবন কোন সময়ের ভাংচুর এর মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে নাকি সুখের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে,কবি যদি...