শনিবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৩

মায়ামানুষ _ অঞ্জন ঘোষ রায়

 

                      

      মায়া মানুষ

    কিছু মায়ামানুষের চোখ

    যাবতীয় জাগতিক বোধ অবশ করে দ্যায়।
    পৃথিবীতে এর আগে আজ অবধি যত গুলি
    চোখের কবিতা লেখা হয়েছে,সেসব কে
    বিশাল খাটো লাগে,
    বিপন্ন লাগে,বিমর্ষ লাগে।

    দৃষ্টি যতদূর যায় ,
    শাল গাছ টপকে,বন বাদার পেরিয়ে,
    ১১২ বছর এর বৃদ্ধ বট এর ছায়া এড়িয়ে,
    যে কোনো বিন্দুতে ,যদি তাকে মনে করা যায়!
    এক অদ্ভুত স্নিগ্ধ তেজস্ক্রিয়তা ডানা ঝটফট করে
    হাজির হয়, ডাকাবুকো বর্ষার মেঘের মতন।

    তার সাথে অদৃশ্য ভাষায় কথা বলে
    পাওয়া যায়,শৈল্পিক নির্যাস।
    সূর্য ডুবে গেলে জঙ্গলে আগুন জ্বালায় কারা?
    তার চেয়েও বেশি আলো থাকে,
    বনেদী জ্যোৎস্নায়,
    তার করুণ কলমীলতা দৃষ্টিতে।।
    তবে,

    অনেক টা নিচুস্তর এ আমি থাকি।
    সেখান থেকে জ্যোত্স্না কে ভালবাসা
    আমার দুঃসাহস।
    ফ্যালফ্যাল করে অন্ধকার থাকে শুধু এই স্তর এ,
    যেখানে নিজের প্রতিবিম্ব দেখতেও
    চরম বেগ পেতে হয়।

    দূরে চিলের শব্দ পাক খেতে খেতে
    এই স্তরের কাছে আসার আগেই
    দপ করে মিলিয়ে যায়।

    মায়া কামনা আকাঙ্ক্ষা গুলো কেমন
    বাষ্পের মতন !
    ওরা বলেছিল ক্ষমতার কাছে চিরকাল
    দুর্বল মারা যায়,
    আর মায়াবীর কাছে কবিরা।

    যথাযথ,সঠিক কথা বোধ হয়।।



    © অঞ্জন ঘোষ রায়।

    একটি কবিতা অমৃতা কে উৎসর্গ করলাম, ওর জন্মদিনে ❤️






    শনিবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০২৩

    থাকা না থাকার মাঝে _ মুক্তগদ্য _ অঞ্জন ঘোষ রায় ২০২৩

    মুক্তগদ্য -  থাকা না থাকার মাঝে






    এই আছি-এই নেই ,এর মধ্যিখানের দূরত্ব টা মাপার কোন পদ্ধতি জানার ইচ্ছা থাকলেও চেষ্টা করিনি কখনো, বিফল হবো জানি।

    কিছুদিন যাবৎ সমস্ত কিছু আলগা আলগা ভাব মাখানো অবস্থায় রয়েছে,

    এটা শীতকালের দোষ নাকি,নিজস্ব ভাঙন,জানিনা।

    শতাব্দী প্রাচীন কোনো তথ্য আমার জানা নেই,যা অনুসরণ করে আমি বেরিয়ে আসতে পারি।

    সময় পেরোতে পেরোতে অনেক গুলো বছর পেরিয়ে গেছে,বাবা মা এর বয়স বাড়তে থাকা,নিজের বয়স বাড়ার চেয়ে অনেক অনেক বেশি ভয়ংকর।

    একা থাকা কঠিন কোনো অংক নয়,যদিও এটা ধ্রুব সত্য কথা ও নয়।প্রতিটা মানুষ এর ভিতর মৃত্যুর ভয় কঠিন ভাবে জ্যান্ত কবর দেওয়া আছে,

    ভেবে চিন্তে দেখা যায়,আমরা কেউই ভালো নেই।

    কোথায় কোথায় হারিয়ে ফেলেছি কত কিছু হিসেব জানতে চাইলে আকাশ অন্ধকার হয়ে যায়,চোখ বুজে আসে।

    হিসেব রক্ষক মাছ ধরবার জাল বুনতে বুনতে নদীতে নেমে গেছে,কিংবা সমুদ্রে।

    এত রং ,স্মৃতি,আনন্দ সব কিছু বৃথা মনে হয় হঠাৎ হঠাৎ,

    পালিয়ে যেতে ইচ্ছে করলেও উপায় নেই,তবু সত্যি বলছি,আমি আর কবিতা গদ্য কিছুই লিখতে চাইছি না,গান গাইছি না,পালাতে চাইছি মাত্র,সমস্ত কিছু থেকে।

    কোনো প্রকাশক চাইবে না আমার কথা গুলো চাপানো হোক ছাপার অক্ষরে।

    শব্দ ভাঙতে ভাঙতে ঘুম ভেঙে যায়,আমার জিভ শুকিয়ে আসে।


    © Anjan Ghosh Roy

    শুক্রবার, ১৯ মে, ২০২৩

    কেউ প্রিয় নয় কারো - গদ্য

     সামান্য এই বয়সের উপলব্ধি থেকে যেটুকু বুঝি ,

    এখানে কেউ কারো কোনোদিন প্রিয় নয়।এখানে সমস্ত টা ক্ষমতার উপর নির্ভর শীল, ওনলি ক্ষমতা।এখানে দুর্বল আর সবলের সম্পর্ক আছে।তুমি শক্তিশালী ,তুমি এগিয়ে যাবে,তোমার ইচ্ছে মতন অনেক কিছুই ঘটবে,ক্ষমতা ছাড়া হলে তোমার প্রিয় বস্তু ,প্রিয় মানুষও অন্যের কব্জায় চলে যাবে,এমনকি নিজের মুহূর্ত ভাবনা ইত্যাদিও,এটাই নিয়ম কাকা।

    তোমার অনুভূতির আবেগের দিকে তাকিয়ে কোনো ব্যাটা বসে নেই,কেউ ভাববে না ,ভাবলেও কারো কিছু যাবে আসবে না তুমি কিভাবে বেঁচে আছ।তুমি ভালো আছো নাকি ভালো নেই!তাতে কার কি যায় আসে ।যে সবল সে ভালো থাকে,দুর্বল কে মাথা নোয়াতে হয়,মানিয়ে নিতে হয়,হেরে যেতে হয়,আমি এখানে বলতে আসিনি হেরে গিয়েও জিতে যাওয়া যায়,সিনেমা অনেক হয়েছে,বাস্তব এ আসা হোক।আপনি কেমন জীবন কাটাবেন সেটা আপনার ক্ষমতার উপর নির্ভর করে,আপনি কাকে ভালোবাসবেন সেটাও আপনার ক্ষমতার উপর নির্ভর করে,আপনি কতটুকু ঘুমাবেন শান্তিতে সেটাও আপনার ক্ষমতা।নীতি নিয়ে লড়াই হয় না,জীবন নীতি আদর্শ নিয়ে চললেও,দুর্বল কে সরে যেতে হবে ,তোমার মুখের গ্রাস ছিনিয়ে নেবে তোমার চেয়ে মাংসপেশির অথবা সামাজিক শক্তি বেশি যার।সে তুমি মানুষ হও কিংবা জন্তু।।।।।তুমি জিতবেনা।।।।


    © Anjan Ghosh Roy

    ,2021

    বৃহস্পতিবার, ৪ মে, ২০২৩

    কবিতা - উচ্ছেদ ২০২৩


     ইনকিউবাস, সঙ্গে শুয়ে আছে আদিম প্রেমিকা।

    এক ঘর লাল রতিক্রিয়া ছড়িয়ে আছে মেঝেতে

    কুড়িয়ে নি, চলো চম্পট দি ,

    দেশ কাল ছেড়ে যথারীতি।

    যাই হোক,অল্প আলো জ্বলুক!


    ঘুম তাড়ানি গানের প্রথম লাইন জানা আছে কারো?

    হোক! কানে শুনি বিসর্জনের মন্ত্র পাঠ।


    বালিশ দুটো লেপ্টে আছে ভীষন, 

    স্বাভাবিক বিভ্রান্তিতে মানুষ ভয় পায়না কখনোই।

    দুটো তরতাজা মানুষ চোখ বুজে মেখে মেখে গেলে,

    তাকে ইচ্ছেসঙ্গম নাও বলা যেতে পারে।


    প্যাথেটিক রং এর কোনো পতাকা নেই কোথাও?

    জোড়ালো শব্দের উৎপত্তি তোমার ভিতর,

    ওঠানামা ছায়া, ইনকিউবাস।


    অন্তর্বাসের ভিতর যে সবেদা গাছ থাকে,তাকে 

    ভালোবাসায় কেটে নিলে কেন?

    ভালোবাসা গেলে যাকিছু থাকে,তাকে

    ঘেন্নার ভয় নামে ডাকে,কিংবা তেতো উচ্ছেদ,


    এসো বৃক্ষরোপণ করি ,

    জমি দখলের ডাক, প্রেম নাম হোক।

    © অঞ্জন ঘোষ রায়।।।

    মঙ্গলবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৩

    কবিতা - আমার শাস্তি হোক | Anjan Ghosh Roy

     

    কবিতা - আমার শাস্তি হোক!

    ©অঞ্জন ঘোষ রায়


    My Lord,

    সিংহাসনে বসে থাকা রাষ্ট্রীয় দানব, শোনো

    আমি আমার ক্ষিদের কথা বলতে গিয়ে

    অন্যায় করেছি।

    শিরচ্ছেদ আমার শাস্তি হোক,

    কোনো জঘন্য - ব্রুটাল অপরাধ ছাড়াই।

    মেঘের মতন গলে যাওয়া ইচ্ছে নিয়ে

    আমার আর্জি - দাবি - অনুরোধ,

     শাস্তি হোক,শাস্তি হোক।


    আমার হয়ে বারবার এটা বলবার কেউ নেই,

    ওরা সবাই ভীতু,ওরা তোমার থুতু চেটে তেষ্টা মেটায়,

    ওরা ভয় পায় মেরুদন্ড সোজা রাখতে।


     শাস্তি হোক আমার

    এই উন্মাদ শতাব্দীর শান্তিপূর্ন রাষ্ট্রের

    একটা কালজয়ী দৃষ্টান্ত হোক এটা,

    যা রাষ্ট্র পারেনি কোনোকালে কোনো নাগরিক কে দিতে 

    তেমন শাস্তি আমার জন্য বরাদ্দ হোক।


    লাগাতার এই কথা গুলো বলে যেতে যেতে

    কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি ,টের পাইনি।


    শাসকের শাসানিতে এ আমার ঘুম ভাঙ্গেনি,

    শাসকের পোশাকের মানুষ মারা গন্ধে 

    আমার বমি আসেনি,

    যতক্ষণ না আমাকে কেউ বিপ্লববাদী বলে ডেকেছে,

    আমি জাগিনি।

    জেগে উঠতেই আমার জিভ সেই একই কথা

    বলতে শুরু করে দিয়েছে


    হে রাষ্ট্র,নাগরিক

    শিরচ্ছেদ আমার শাস্তি হোক,

    কোনো জঘন্য - ব্রুটাল অপরাধ ছাড়াই।

    মেঘের মতন গলে যাওয়া ইচ্ছে নিয়ে

    আমার আর্জি - দাবি - অনুরোধ,

     

    শাস্তি হোক,শাস্তি হোক।


    ©অঞ্জন ঘোষ রায়।

    মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল, ২০২৩

    লাজুক প্যাঁচা | অঞ্জন ঘোষ রায় এর কবিতা

     






    কবিতা - লাজুক প্যাঁচা 

    © অঞ্জন ঘোষ রায়।


    বৃত্ত আঁকতে গেলে হাত কেঁপে যায়,

    শোরগোল ভর্তি মাথার ভিতর একটা ফাঁকা বেঞ্চ,

    এক ইঞ্চি ফুরফুরে জগৎ প্রবেশ করলে

    সব চুপ,কেউ ভালো নেই,

    পালক নরম বিছানায় ভালোবাসা - ঘুম থাকে না ।


    হাওয়া তে নাট্যচর্চা অদৃশ্য মানুষের কাজ,

    কোনো কার্নিভাল তেমনই দুর্বল মানুষের নয়।

    শব্দের গর্ভপাতে নীরবতা জন্মায়,

    আর অন্ধকারে নদীর শব্দে, বিমর্ষতা।


    কোনো চাঁদ এর ছায়া রক্তের উপর পড়লে 

    নিজেকে আততায়ী ধরে নেওয়া যায়,

    হিজিবিজি মন এর টানেল কখনোই 

    ফর্সা কেনো হয় না?

    ঔপনিবেশিক যন্ত্রনায় কিসের কপিরাইট থাকে মানুষের? উত্তর বেপাত্তা।


    উত্তর ডুবে গেছে নির্ঘুম বেডরুমের 

    বেলাগাম খোলা থাকা জানলায়।

    যেখানে নিজস্ব জঙ্গলের ভিতর দিয়ে 

    বাঁশি বাজায় কোনো আত্মসুখ খুঁজতে থাকা

    তুলতুলে লাজুক প্যাঁচা।


    © অঞ্জন ঘোষ রায়।




    রবিবার, ৯ এপ্রিল, ২০২৩

    খবরের কাগজ | Khoborer Kagoj | Anan Ghosh Roy Kobita






    কবিতা - খবরের কাগজ | © অঞ্জন ঘোষ রায় ২০২৩


    খবর ফুরিয়ে গেলে যেটুকু কাগজ বাকি থাকে,

    সেখানে কোনো কালি থাকে না।

    ফুটপাথ দিয়ে কোনো মানুষ হেঁটে গেলে 

    তার চোখ ফুটপাথে বসবাস করে।

    ঢেউ কেটে কেটে পাথুরে মেঘ বানানো 

    শিল্পীর কাজ নয়,

    মন নিজস্ব যুক্তি দিয়ে হেঁটে যেতে যেতে থেমে গেলে,

    স্রোত এর দরকার হয়।

    খামোকা কাঁটা চামচ এর নিচে

    তরল এর আহ্লাদ জমে থাকে,

    প্রয়োজন নেই ,তবুও।

    দেশ এ গরীব এর সংখ্যা বৃদ্ধিতে

    পতাকা শোভা পায় বোধ হয়।

    রাষ্ট্র ল্যাংটো হলে নাগরিক এর দুঃখ বাড়ে,

    যে ফুল গাছ এ পাতা কম থাকে তাকে

     চিরকাল অসুস্থ মনে হয়।

    © অঞ্জন ঘোষ রায়।

    বৃহস্পতিবার, ৬ এপ্রিল, ২০২৩

    অসতী পুরুষত্বের ফ্যান্টাসি

     



    অসতী পুরুষত্বের ফ্যান্টাসি

    © Anjan Ghosh Roy


    মূলত আয়নার সামনে যাকে আমি দেখতে পাই
    সে অত্যন্ত স্বচ্ছ সাহসী একজন বদ - লম্পট
    দাগী চরিত্রের মানুষ।


    যে হাসলে আমি তাকে ঘৃনা করি,
    যে প্রেমিক সাজলে আমি তাকে কামুক প্রতিবিম্ব ছাড়া,
    আর কোনো কিছুই ভাবতে পারিনা।


    সমস্ত কিছু প্রকাশ পেলে তাকে থুতু দিয়ে চলে যেতে পারে
    অধিকাংশ তথাকথিত ভদ্দর নোক অথবা মহিলা,
    আমার আয়না আমার অসতী পুরুষত্বের
    ফ্যান্টাসি বহন করে।


    কেউ পাথর ছুঁড়ে মারতে গেলেও,
    আমি বাধা দেবো না কখনোই,
    কারণ তারা আমার আয়নার চরিত্র কে
    হজম করতে অক্ষম ,


    এটা ধ্রুব সত্যি দের মতোই ব্যাপক চকচকে।।।।


    © অঞ্জন ঘোষ রায়

    কবি এবং কেরানী কবি

    মহৎ কবি কখনো ডায়েরি লিখবেন না, এটা আপনাকে বুঝতে হবে। তার জীবন কোন সময়ের ভাংচুর এর মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে নাকি সুখের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে,কবি যদি...